• বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
  • ঢাকা, বাংলাদেশ

কমরেড জি. এন. সাঁইবাবা লাল সালাম

কমরেড জি. এন. সাঁইবাবা লাল সালাম

  আন্দোলন প্রতিবেদন  

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া মহান বিপ্লবী নকশালবাড়ি আন্দোলনের ধারাবাহিকতা আজকের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) কর্তৃক পরিচালতি গণযুদ্ধ। আর মধ্য ভারতের অন্যতম রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশেই অন্যতম ঘাটিঁ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে মাওবাদীরা। ১৯৬৭ সালে এই রাজ্যেই জন্ম হয়েছিল গোকারাকান্দা নাগা সাঁইবাবা বা জি. এন. সাঁইবাবার। 

গরিব কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া সাঁইবাবা আজীবন ছিলেন জনগণের প্রকৃত মুক্তি ও স্বাধীনতার পক্ষে একজন বলিষ্ঠ কর্মী। ৫ বছর বয়স থেকে পোলিওতে আক্রান্ত, শারীরিকভাবে ৯০% প্রতিবন্ধী এবং হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হলেও তার অদম্য বিপ্লবী সত্ত্বাকে দমাতে পারেনি ভারত রাষ্ট্র। ২০১৪ সালে মাওবাদীদের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে, এবং ১০বছর জেল-জুলুম নির্যাতনের পর গত মার্চ মাসে ছেড়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনের শারীরিক মানসিক নির্যাতনরে প্রভাবে তাঁর মৃত্যু হয় অক্টোবরের ১২ তারিখ। স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে এটাকে প্রচার করা হলেও এই মৃত্যু আদতে ভারত রাষ্ট্রের একটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড যার সাথে জড়িত হিন্দুত্বফ্যাসিবাদী মোদি সরকার। 

২০০৫ সালে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট বা Revolutionary Democratic Front এ যোগদান করেন সাঁইবাবা। ২০১২ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে সাঁইবাবা কাজ করেছিলেন। সাথে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষকও ছিলেন। শিক্ষকতা করা কালে তিনি তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাষ্ট্রীয়তা অর্জনের আন্দোলনের পক্ষে অকুতোভয় থেকে ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন সাঁইবাবা সর্বভারতীয় জনতার বিদ্রোহ মোর্চা (All India People’s Resistance Forum) এর সাথে সক্রিয়ভাবে তিনি ভারতীয় জনগণের এবং আদিবাসীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেন। "সালওয়া জুডুম", "অপারেশন গ্রিনহাণ্ট" এবং আদিবাসী এলাকায় সাম্রাজ্যবাদী লুটেরাদের অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কাজ করে গিয়েছেন। জনগণের পক্ষে তাঁর এমন অবস্থান গ্রহণ ও আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করাতে ভূমিকা ছিল বলে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। 

সাঁইবাবা নিজের নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যেভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, তা নিঃসন্দেহে পুরো বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জাতি শ্রেণির মুক্তির সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগাবে। এমন বিপ্লবী বীরত্ত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিরা সন্ত্রাসী রাষ্ট্রসমূহের মনে কি পরিমাণ ভয় সৃষ্টি করে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সাঁইবাবাকে জেলখানায় নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করা। সাঁইবাবা আজকের ভারতের জনগণের স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের একটি প্রতীক। হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারতের জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতার জন্যে যে যুদ্ধ শুরু করেছেন তার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র নিহত হয়েছেন। তাঁর জীবন ও সংগ্রাম পুরো বিশ্ব জুড়ে নিপীড়িত জাতি-জনতা ও শ্রেণির মুক্তির কমিউনিস্ট আন্দোলনে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

ভারতের গণযুদ্ধের সকল শহীদ লাল সালাম!

কমরেড জি. এন. সাঁইবাবা লাল সালাম

 আন্দোলন প্রতিবেদন 
বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪  |  অনলাইন সংস্করণ

১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া মহান বিপ্লবী নকশালবাড়ি আন্দোলনের ধারাবাহিকতা আজকের ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) কর্তৃক পরিচালতি গণযুদ্ধ। আর মধ্য ভারতের অন্যতম রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশেই অন্যতম ঘাটিঁ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে মাওবাদীরা। ১৯৬৭ সালে এই রাজ্যেই জন্ম হয়েছিল গোকারাকান্দা নাগা সাঁইবাবা বা জি. এন. সাঁইবাবার। 

গরিব কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া সাঁইবাবা আজীবন ছিলেন জনগণের প্রকৃত মুক্তি ও স্বাধীনতার পক্ষে একজন বলিষ্ঠ কর্মী। ৫ বছর বয়স থেকে পোলিওতে আক্রান্ত, শারীরিকভাবে ৯০% প্রতিবন্ধী এবং হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হলেও তার অদম্য বিপ্লবী সত্ত্বাকে দমাতে পারেনি ভারত রাষ্ট্র। ২০১৪ সালে মাওবাদীদের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে, এবং ১০বছর জেল-জুলুম নির্যাতনের পর গত মার্চ মাসে ছেড়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিনের শারীরিক মানসিক নির্যাতনরে প্রভাবে তাঁর মৃত্যু হয় অক্টোবরের ১২ তারিখ। স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে এটাকে প্রচার করা হলেও এই মৃত্যু আদতে ভারত রাষ্ট্রের একটি কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড যার সাথে জড়িত হিন্দুত্বফ্যাসিবাদী মোদি সরকার। 

২০০৫ সালে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট বা Revolutionary Democratic Front এ যোগদান করেন সাঁইবাবা। ২০১২ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত সংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে সাঁইবাবা কাজ করেছিলেন। সাথে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষকও ছিলেন। শিক্ষকতা করা কালে তিনি তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাষ্ট্রীয়তা অর্জনের আন্দোলনের পক্ষে অকুতোভয় থেকে ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে গিয়েছেন সাঁইবাবা সর্বভারতীয় জনতার বিদ্রোহ মোর্চা (All India People’s Resistance Forum) এর সাথে সক্রিয়ভাবে তিনি ভারতীয় জনগণের এবং আদিবাসীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেন। "সালওয়া জুডুম", "অপারেশন গ্রিনহাণ্ট" এবং আদিবাসী এলাকায় সাম্রাজ্যবাদী লুটেরাদের অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কাজ করে গিয়েছেন। জনগণের পক্ষে তাঁর এমন অবস্থান গ্রহণ ও আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করাতে ভূমিকা ছিল বলে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। 

সাঁইবাবা নিজের নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যেভাবে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, তা নিঃসন্দেহে পুরো বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন জাতি শ্রেণির মুক্তির সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জোগাবে। এমন বিপ্লবী বীরত্ত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিরা সন্ত্রাসী রাষ্ট্রসমূহের মনে কি পরিমাণ ভয় সৃষ্টি করে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় সাঁইবাবাকে জেলখানায় নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করা। সাঁইবাবা আজকের ভারতের জনগণের স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের একটি প্রতীক। হিন্দুত্ব ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভারতের জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতার জন্যে যে যুদ্ধ শুরু করেছেন তার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র নিহত হয়েছেন। তাঁর জীবন ও সংগ্রাম পুরো বিশ্ব জুড়ে নিপীড়িত জাতি-জনতা ও শ্রেণির মুক্তির কমিউনিস্ট আন্দোলনে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

ভারতের গণযুদ্ধের সকল শহীদ লাল সালাম!

আরও খবর
 
শনি
রোব
সোম
মঙ্গল
বুধ
বৃহ
শুক্র